আমিরুল ইসলাম, সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি: কার্তিক মাস শেষে শীত অনুভূত হচ্ছে। ঘুমোতে গেলে জড়াতে হচ্ছে কাঁথা, ভোরে রাস্তায় বের হলে কুয়াশায় ঘাসের উপর শিশিরবিন্দু জানান দেয় শীত অনুভবের আগমনকে। সারাদিনে গরম অনুভব হলেও সন্ধ্যার শীতল হাওয়া আর ভোররাতে ঘন কুয়াশার হাতছানিই বলে দিচ্ছে শীত। মাঝে মাঝে ঘন কুয়াশার চাদরে ঢাকা পড়ছে ভোরের সকাল। ফলে বেড়েছে শীত উপশমের লেপ-তোশক কারিগরদের ব্যস্ততা। অনেকেই আবার ভ্যানে করে লেপ-তোশক বিক্রি করার জন্য নেমে পড়েছে গ্রামে গ্রামে। শীতের পোশাক বিক্রির জন্য ব্যবসায়ীদের আনাগোনাও বেড়েছে সিরাজগঞ্জের কামারখন্দে। গ্রামের নারীরাও শীত নিবারণের জন্য নতুন নতুন কাঁথা সেলাই করে নিচ্ছেন।
মঙ্গলবার ১৪ নভেম্বর উপজেলার জামতৈল বাজারের বিভিন্ন বেডিং আর কটন শোপ দোকানগুলোতে সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, কারিগরদের লেপ তৈরির কর্মব্যস্ততা। কারিগররা কেউ তুলো ধুনছে, কেউবা ব্যস্ত নতুন বা পুরাতন লেপ-তোশক সেলাইয়ের কাজে, কেউবা লেপে হরেকরকম ডিজাইন ফুটিয়ে তুলছেন।
দোকানে আসা উপজেলার রায়দৌলতপুর গ্রামের জায়েদা আক্তার বলেন, পুরানো লেপ নতুন করে মেরামত করতে এসেছি প্রয়োজনে আরো কিছু তুলা দিয়ে ঠিক করে নেবো। আরেক ক্রেতা বলেন, একটি লেপের অর্ডার দিয়েছি। এ ছাড়া একটি পুরাতন লেপ মেরামতের জন্য এনেছি। কাপড়, তুলা, মজুরিসহ সব মিলে ১৪০০ টাকা খরচ হচ্ছে। তবে লেপের মূল্য খুব একটা বেশি নয় বলে জানান তিনি।
জামতৈল বাজারের লেপ-তোশক কারিগর মালেক, রফিকুল, মান্নান, আবু তাহের, রেজাউল করিম বলেন, শীতের মৌসুম শুরু হলেও লেপ-তোশক মহাজনরা এবং কারিগররা খুশি নেই। কারণ বাজারের সবকিছুর দাম বেড়েছে সেই সাথে লেপ- তোশকের কাপড় এবং তুলার দামও বেড়েছে। যে কারনে মানুষের নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য কিনতেই পুরো আয় চলে যায়। সারাদিনে ৪০০- ৫০০ টাকা মজুরি উঠানো খুবই কষ্টকর। জানিনা কবে ব্যবসা ভালো হবে।
জামতৈল বাজারের হানিফ বস্রালয়ের হানিফ বলেন, মানুষের হাতে টাকা পয়সা নাই বলে, শীত শুরু হলেও লেপ- তোশক বানানো ঐভাবে শুরু হয়নি। গরমের সময় যে ব্যবসা করেছি এখন সেটুকুও করতে পারছি না। বেশীরভাগ মানুষ পুরাতন লেপ- তোশকের উপর নির্ভর করছে। নতুন একটি লেপ-তোশক তৈরি করতে ১২০০-১৫০০ টাকার প্রয়োজন হয়।
আতিক আতাউল নিউ তুলার দোকানের মালিক শহীদ রেজা বলেন, অন্যান্য বছরের তুলনায় এ বছরে ব্যবসা অনেক মন্দা যাচ্ছে। অনেকেই তৈরি শীতের পোশাকের দ্বারস্থ হচ্ছে। তারা ফোম মাট্রেস এগুলো ব্যবহারের দিকে ঝুঁকছে। এতে একদিকে যেমন আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি পাশাপাশি কারিগররা কর্ম হারিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে।